রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

জিলহজ মাসের আমল

মাওলানা আবদুল জাব্বার:
শুরু হয়েছে হিজরি সালের ১২তম মাস জিলহজ। মহান আল্লাহ এই মাসের প্রথম ১০ দিনকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেছেন। কোরআন-হাদিসে এ মাসের বিশেষ মর্যাদার কথা বর্ণিত হয়েছে। বিভিন্ন হাদিসে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমলের কথা এসেছে। এগুলো হলো

চুল ও নখ না কাটা : জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে কোরবানি দেওয়া পর্যন্ত হাত ও পায়ের নখ, মাথার চুল কাটা বা মুণ্ডানো, মোচ ছোট করা বা কাটা, নাভি ও বগলের নিচের অযাচিত পশম না কাটা উত্তম। জিলহজ মাস শুরুর আগেই এসব বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। হজরত উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা জিলহজ মাসের নতুন চাঁদ দেখলে এবং তোমাদের কেউ কোরবানির ইচ্ছা করলে সে যেন নিজের চুল ও নখের কোনো কিছু না কাটে। সহিহ মুসলিম : ১৯৭৭

কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই, এমন ব্যক্তি যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এ আমল করে তিনিও কোরবানি দেওয়ার পূর্ণ সওয়াব পাবেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ এই উম্মতের জন্য কোরবানির দিনকে ঈদ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি দুগ্ধবতী ছাগল ছাড়া অন্য কোনো পশু না পাই তাহলে কি কোরবানি করব? তিনি বললেন, না। বরং তুমি (ঈদের দিন কোরবানির পর) তোমার চুল ও নখ কাটবে। গোঁফ ছোট করবে। নাভির নিচের লোম কাটবে। এটাই আল্লাহর কাছে তোমার পরিপূর্ণ কোরবানি। সুনানে আবু দাউদ : ২৭৮৯

রোজা রাখা : জিলহজ মাসের প্রথম ৯ দিন রোজা রাখা সুন্নত। এসব দিনে রোজার বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। হজরত হাফসা (রা.) বর্ণনা করেছেন, চারটি আমল নবী করিম (সা.) কখনো ছাড়তেন না। আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতি মাসের তিন দিনের রোজা, ফজরের আগে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ। সুনানে নাসায়ি : ২৪১৫

আর ৯ জিলহজ তথা আরাফাতের দিন রোজা রাখলে আগে ও পরে এক বছর গোনাহ মাফ হবে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আরাফাতের দিন (৯ জিলহজ) রোজার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে, তিনি এর মাধ্যমে বিগত এক বছর ও আগামী বছরের গোনাহ মাফ করবেন। সহিহ মুসলিম : ১১৬২

জিকির করা : জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন বেশি পরিমাণ জিকিরের কথা হাদিসে এসেছে। বিশেষত তাকবির (আল্লাহু আকবার), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ) পড়া সুন্নত।

তাকবির পাঠ : জিলহজ মাসের প্রথম দিন থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত তাকবির পাঠ করা একটি সাধারণ আমল। তবে জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামাজ থেকে ১৩ তারিখ আসরের নামাজ পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ শেষে তাকবির বলবে। এটাকে তাকবিরে তাশরিক বলা হয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহকে স্মরণ করো।’ সুরা বাকারা : ২০৩

তাকবির হলো, ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’

অর্থ : আল্লাহ বড় আল্লাহ বড়, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আল্লাহ বড় আল্লাহ বড়। সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

হজ ও ওমরাহ করা : পবিত্র হজ ও ওমরাহ জিলহজ মাসের অন্যতম আমল। নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে জীবনে একবার হজ করা ফরজ।

কোরবানি করা : জিলহজ মাসের বিশেষ আমল হলো কোরবানি করা। যতটুকু সম্পদ থাকলে জাকাত ওয়াজিব হয় ততটুকু সম্পদের জন্য কোরবানি ওয়াজিব হবে। জিলহজ মাসের দশম দিন থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত কোরবানি করা যাবে। এ সময় হাজিরা মিনা ও আশপাশের প্রাঙ্গণে কোরবানি করেন। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার রবের জন্য নামাজ পড় এবং কোরবানি করো।’ সুরা কাউসার : ২

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION